Department of Bengali
Permanent URI for this collection
Browse
Browsing Department of Bengali by Subject "Drama"
Now showing 1 - 1 of 1
Results Per Page
Sort Options
Item Bangla Geetikar Adhunik Rupantar Natak O yatrar seemayMukherjee, Ritam‘কোথায় পাব কলসী কইন্যা কোথায় পাব দড়ি। তুমি হও গহীন গাঙ আমি ডুইব্যা মরি।।’ নয়ে নাটুয়া’র ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র প্রযোজনায় এই গান শেষ করে মাইক্রফোন নামানোর আগেই প্রেক্ষাগৃহ করতালিতে ফেটে পড়ল। আজ অবধি বাংলা জনপ্রিয়তম (অধিকাংশ জনের মতে) যাত্রাপালার নাম ‘সোনাই দীঘি’। ‘মাধব মালঞ্চী কইন্যা’ বাংলা থিয়েটারে এক মাইলস্টোন! ‘সোনাই মাধব’-এর অভিনয় করে বাংলাদেশের ‘লোক নাট্যদল’ ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। শ্রীকুমার ভট্টাচার্য ‘কাজলরেখা’ নাটকে সূঁচরাজার সুস্থ হয়ে ওঠাকে আধুনিক আকুপাংচার চিকিৎসার সুফল হিসেবে দেখান। হিন্দু-মুসলিমের বিভেদ দেখিয়ে সানি চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহুয়া সুন্দরী’ মহুয়া গীতিকার নতুন পাঠ নির্মাণ করেন। কেন বাংলা নাটক, যাত্রা, থিয়েটার নিজের উপাদানের জন্য বারবার বাংলা গীতিকার কাছে যায়? কোন্ সময় থেকে তা শুরু হলো? আজ পর্যন্ত কতগুলি মাধ্যমে বাংলা গীতিকার রূপান্তর হয়েছে? গীতিকার কাহিনির যে আধুনিক রূপান্তর হয়েছে তার চরিত্র, বৈশিষ্ট্য কী?- ইত্যাদি নানান দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে ‘বাংলা গীতিকার আধুনিক রূপান্তর : নাটক ও যাত্রায় সীমায়’ শিরোনামের গবেষণায়। বাংলার তিন ধরনের গীতিকা- ‘নাথ গীতিকা’, ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ ও ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’র কাহিনি বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে কীভাবে নাটক ও যাত্রায় আধুনিক রূপান্তর লাভ করেছে সে বিষয়ে বিস্তৃত আলোকপাত করা হয়েছে বর্তমান গবেষণায়। প্রথম অধ্যায়ে গীতিকার জন্ম ইতিহাস, বৈশিষ্ট্য ও বাংলা গীতিকার আবিষ্কার ও প্রকাশ ইতিহাস বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে পশ্চিমবঙ্গে নাটক ও নাট্যের মাধ্যমে গীতিকার রূপান্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে পশ্চিমবঙ্গে যাত্রায় গীতিকার রূপান্তর বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ে পশ্চিমবঙ্গে অন্যান্য শিল্প মাধ্যমে (যেমন কবিতা, উপন্যাস, ছোটোগল্প, চলচ্চিত্র, নৃত্য, সংগীত ইত্যাদি) গীতিকার আধুনিক রূপান্তরের বিষয়ে অতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে (যেমন- নাটক, যাত্রা, কিস্সা পালা, কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, চলচ্চিত্র, নৃত্য, সংগীত ইত্যাদি) গীতিকার কাহিনির যে আধুনিক রূপান্তর ঘটেছে সে বিষয়ে পঞ্চম অধ্যায়ে সংক্ষিপ্ত তথ্যমূলক আলোচনা রয়েছে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে গীতিকার রূপান্তরের কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চলেছে। সপ্তম অধ্যায়ে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যম কীভাবে নিজস্ব শর্তে গীতিকা গ্রহণ করছেন এবং নিজেকে সমৃদ্ধ করছে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অষ্টম অধ্যায়ে সমাজ, সংস্কৃতিতে রূপান্তরের প্রভাবের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। উপসংহার অংশে বাংলা সাহিত্যের আদি যুগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলার নিজস্ব অভিনয় পদ্ধতির বিবর্তনের সূত্র ধরে ঐতিহ্যের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা, বর্তমানে পুনরায় গীতিকার আখ্যান নির্ভর কাহিনির মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে লগ্নতা- এইসকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গবেষণা কর্মের শেষে রয়েছে গ্রন্থপঞ্জি। প্রতিটি অধ্যায়ের আলোচনার শেষে অধ্যায়ের আলোচনার সঙ্গে সংগতি রেখে ছবি সংযুক্ত হয়েছে। সমকালীন সমাজ, শিল্প, রাজনীতি এমনকি শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবন কতখানি ভূমিকা পালন করছে গীতিকার আধুনিক রূপান্তরে- ইত্যাদি বিষয় পাঠ আধেয় ও আন্তর্বিদ্যামূলক গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, ঐতিহাসিক পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকারও গ্রহণ করা হয়েছে। এই গবেষণা বর্তমান গবেষকের জানার সীমার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে গীতিকার আধুনিক রূপান্তর নিয়ে প্রথম কাজ (সম্ভবত বাংলাদেশেও)। পশ্চিমবঙ্গের নাটক ও যাত্রার গীতিকার রূপান্তরের পাঠভিত্তিক আলোচনা এই গবেষণায় অনেকখানি হয়ত করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এদেশে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে গীতিকার যে রূপান্তর হয়েছে কিংবা বাংলাদেশে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে গীতিকার রূপান্তরের যে বিস্তৃত ক্ষেত্র তা নিয়ে নানা ধরনের গবেষণার পথপ্রদর্শক হতে পারে এই গবেষণা। গীতিকার ভাষা এবং গীতিকার রূপান্তরিত শিল্পের ভাষা বদল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বদলের সঙ্গে মানুষের চাহিদার বদল, শিল্প রাজনীতি, লোকসংস্কৃতি ও নাগরিক সংস্কৃতির পারস্পরিক আদানপ্রদান- ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সক্ষম এই গবেষণা।