Department of Bengali
Permanent URI for this collection
Browse
Recent Submissions
Item Bharatiya Aitihye O Sahitye Shiva-Sanskritir Baichitrya O Bibarton (Sindhu Sobhyota Theke Oshtadosh Shatak)Biswas, Uttam Kumarআমাদের গবেষণার বিষয় ‘ভারতীয় ঐতিহ্যে ও সাহিত্যে শিব-সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ও বিবর্তন (সিন্ধু সভ্যতা থেকে অষ্টাদশ শতক)’। এই কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখাতে চেয়েছি ভারতীয় চেতনায় ও সাহিত্যে যেভাবে শিবকে পাই তার বৈচিত্র্যপূর্ণ রূপ ও ঐতিহ্যের পথ ধরে তার ক্রমবিবর্তনের রূপরেখাটি। বিশেষত, মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে শিবকে যেভাবে পাওয়া যায় তা কীভাবে ক্রমান্বয়ে বিবর্তনের মাধ্যমে এসেছে অন্বেষণের চেষ্টা করেছি আমরা। এই গবেষণাকে প্রস্তাবনা ও উপসংহার বাদ দিয়ে মোট আটটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করা হয়েছে। অধ্যায়গুলি আলোচনার সুবিধার্থে একাধিক পরিচ্ছেদে বিভক্ত। আলোচনার প্রবেশক অংশ হিসাবে ‘প্রস্তাবনা’য় গবেষণাকর্মের অভিমুখটি সংক্ষেপে বলা হয়েছে। প্রথম অধ্যায়ের শিরোনাম ‘সিন্ধুপারে আদিযোগী : প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যে শিবচেতনার উৎস’। অধ্যায়টি তিনটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। সিন্ধু সভ্যতার ‘পশুপতির’ ধারণা সেখানে কীভাবে ক্রমান্বয়ে গড়ে উঠল তা সেখান থেকে প্রাপ্ত একাধিক সিলের উপর ভিত্তি করে সন্ধানের চেষ্টা করা হয়েছে। একইসঙ্গে সিন্ধু সভ্যতায় উৎপাদন সংস্কৃতির সঙ্গে ও যোগের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততার দিকটিও স্পষ্ট করা হয়েছে এই অধ্যায়ে। দ্বিতীয় অধ্যায়ের শিরোনাম ‘বৈদিক সাহিত্যে রুদ্র : রূপ ও রূপান্তর’। অধ্যায়টিকে দু’টি পরিচ্ছেদে ভাগ করা হয়েছে। প্রাগার্য সভ্যতা থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে কীভাবে বৈদিক রুদ্রের ধারণা গড়ে উঠল সেই বিষয়েই বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই অধ্যায়ে। বৈদিক রুদ্রের যে দিকগুলি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে শিবের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় সেগুলিও প্রসঙ্গক্রমে দেখানো হয়েছে। একইসঙ্গে বৈদিক রুদ্রের সঙ্গে অন্যান্য আর্য দেবতার সংযোগ অন্বেষণের প্রয়াস করা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ের শিরোনাম ‘সংস্কৃত সাহিত্যে রুদ্র-শিবের ঐতিহ্য ও স্বাতন্ত্র্য’। অধ্যায়টিকে চারটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করা হয়েছে। এই অধ্যায়ে বৈদিক রুদ্র কীভাবে সামাজিক ও তাত্ত্বিক চেতনার মধ্যে দিয়ে বিবর্তিত হয়ে পৌরাণিক ও মহাকাব্যিক শিবকেন্দ্রিক চেতনা ও কাহিনির উদ্ভব হয়েছে তা অনুসন্ধান করা হয়েছে। সংস্কৃত ধ্রুপদী কাব্যে নাটকে তাঁর স্বরূপ, তন্ত্র ও নাথসাহিত্যে তাঁর অবস্থান বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই অধ্যায়টিতে। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের শিবচেতনা মূলত লৌকিক হলেও পুরাণ, তন্ত্র কিংবা নাথপন্থার প্রভাব সেখানে যথেষ্ট। তাই সংস্কৃত সাহিত্যের শিব সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণের সূত্রে প্রসঙ্গক্রমে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে উল্লিখিত সেই বিষয় সংক্রান্ত দিকগুলিও তুলে ধরা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ের শিরোনাম ‘সংস্কৃত ও প্রাকৃত প্রকীর্ণ কবিতাবলীতে শিবপ্রসঙ্গ’। অধ্যায়টিকে দু’টি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকীর্ণ কবিতার সংকলন গ্রন্থ যেমন— ‘প্রাকৃতপৈঙ্গল’, ‘সদুক্তিকর্ণামৃত’, ‘সুভাষিতরত্নকোষ’ ইত্যাদি অবলম্বনে সংস্কৃত ও প্রাকৃত প্রকীর্ণ কবিতায় শিবের পৌরাণিক ও মানবিক দিক আলোচনা করা হয়েছে। প্রকীর্ণ কবিতাবলীতে কবিরা শিবকে যেভাবে মাটিঘেঁষা দরিদ্র জীবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়েছেন অবশ্যই তাঁর অনার্য, ব্রাত্য জীবনের সঙ্গে সংযোগের বিষয়টি স্মরণে রেখে তা পরবর্তীকালের বাংলা মঙ্গলকাব্যকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল তা আলোচনা করা হয়েছে এই অধ্যায়ে। পঞ্চম অধ্যায়ের শিরোনাম ‘মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে শিবকথার বৈচিত্র্য ও বিবর্তন’। অধ্যায়টিকে চারটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করা হয়েছে। বাংলা মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ সাহিত্য, নাথ সাহিত্য ও শাক্ত পদাবলীতে কীভাবে আমরা শিবকে পাওয়া যায় তা অন্বেষণ করা হয়েছে এই অধ্যায়টিতে। একইসঙ্গে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায়ে আলোচিত বৈদিক ও পৌরাণিক রুদ্র-শিবের ধারণা মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে তাও বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই অধ্যায়টিতে। এই শিবের উপর তান্ত্রিক চেতনা ও লোকঐতিহ্যগত চেতনার প্রভাব নিরূপণ করা হয়েছে এই অধ্যায়টিতে। মনসামঙ্গল কাব্যের ক্ষেত্রে বিজয় গুপ্ত, নারায়ণ দেব, তন্ত্রবিভূতি, জগজ্জীবন ঘোষাল, বিপ্রদাস পিপিলাই, কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ এই ছ’জন কবির কাব্য অবলম্বনে; চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের ক্ষেত্রে দ্বিজ মাধব, মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, মানিক দত্ত এই তিন কবির কাব্য অবলম্বনে; ধর্মমঙ্গল ও অন্যান্য ধর্মঠাকুর কেন্দ্রিক সাহিত্য যেমন— ‘শূন্যপুরাণ’, ‘ধর্ম্মপূজাবিধান’, রূপরাম চক্রবর্তী, ঘনরাম চক্রবর্তী, মানিকরাম গাঙ্গুলির ধর্মমঙ্গল কাব্য অনুসারে, ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্য অনুসারে, রামকৃষ্ণ কবিচন্দ্রের শিবায়ন, দ্বিজ রতিদেবের ‘মৃগলুব্ধ’, রামরাজার ‘মৃগলুব্ধ সংবাদ’, রামেশ্বর ভট্টাচার্যের শিবায়ন কাব্য অনুসারে পৌরাণিক ও লৌকিক শিবের নানা দিক বিশ্লেষিত হয়েছে। অনুবাদ সাহিত্যের ক্ষেত্রে ‘কৃত্তিবাসী রামায়ণ’, ‘কাশীদাসী মহাভারত’ ও মালাধর বসুর ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ কাব্য অবলম্বনে শিব চরিত্রে পৌরাণিকতা ও লৌকিকতার অনুসরণ আলোচনা করা হয়েছে। নাথসাহিত্যের ক্ষেত্রে ‘গোরক্ষ-বিজয়’ কাব্যের সৃষ্টিপালায় ও নাথধর্মের আদিগুরু হিসেবে এবং ‘হাড়মালা’ কাব্য অবলম্বনে যোগসাধনার প্রবক্তারূপে শিবকে দেখানো হয়েছে। অষ্টাদশ শতকের দু’জন শাক্ত পদাবলীকার রামপ্রসাদ সেন ও কমলাকান্তের পদ অবলম্বনে শিবের চরিত্রকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে লোকঐতিহ্য ও তান্ত্রিক ঐতিহ্যের অনুসরণে। ষষ্ঠ অধ্যায়ের শিরোনাম ‘বাংলার লোকঐতিহ্যে শিব : লোকসাহিত্যে ও রূপবৈচিত্র্যে’। এই অধ্যায়টিকে দু’টি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করা হয়েছে। এই অধ্যায়ে বাংলার লোকসাহিত্যে অর্থাৎ প্রবাদে, লোকগানে, ছড়ায়, ব্রতকথায় শিবের অবস্থান ও অনুষঙ্গ দেখানো হয়েছে। এছাড়া সমগ্র বাংলা জুড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষেত্রসমীক্ষার মাধ্যমে শিবকেন্দ্রিক যে সমস্ত লৌকিক রূপের সঙ্গে (মহাকাল, মহারাজ, ত্রিনাথ, সন্ন্যাসী ঠাকুর ইত্যাদি) ও স্থানবিশেষে শিবকেন্দ্রিক লৌকিক ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে সেগুলির পরিচয় স্পষ্ট করা হয়েছে। সপ্তম অধ্যায়ের শিরোনাম ‘প্রাদেশিক ভারতীয় সাহিত্যে শিবশঙ্কর : ঐতিহ্যের অনুসন্ধান’। এই অধ্যায়টিকে পাঁচটি পরিচ্ছেদে বিন্যস্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে শিবকেন্দ্রিক সাহিত্যের প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনা করে পাঁচটি ভাষাকে নির্বাচন করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রাদেশিক সাহিত্যের সঙ্গে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের তুলনামূলক আলোচনা ও প্রভাব নির্ধারণের চেষ্টাও করা হয়েছে। অষ্টম অধ্যায়ের শিরোনাম ‘আধ্যাত্মিক চেতনা ও স্থাপত্য-ভাস্কর্যে শিবময় ভারতবর্ষ’। অধ্যায়টিকে দু’টি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করা হয়েছে। ভারতীয় আধ্যাত্মিক জীবনে শিবের সম্পৃক্ততার স্বরূপটি নির্ধারণ করতে গিয়ে ভারতবর্ষের বিখ্যাত শিবস্থানগুলির উল্লেখ ও সেই স্থানগুলির পৌরাণিক অনুষঙ্গের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই অধ্যায়টিতে। ভারতীয় অধ্যাত্মজীবনে তিনি এতটাই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যে একইসঙ্গে ভারতীয় স্থাপত্য-ভাস্কর্যে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর নানা বৈচিত্র্যময় দিক। বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের মাধ্যমে সেই বিষয়গুলি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এই অধ্যায়ে। সেই উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান যেমন— ইলোরা, এলিফ্যান্টা, ভুবনেশ্বর, মহাবলীপুরম, খাজুরাহো ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থানে এবং একাধিক সংগ্রহশালায় গিয়ে ক্ষেত্রসমীক্ষা করা হয়েছে। শেষে রয়েছে ‘উপসংহার’। এই অংশে আমাদের গবেষণাকর্মের সামগ্রিক মূল্যায়ন করা হয়েছে। এরপর রয়েছে একটি ‘পরিশিষ্ট’ অংশ। এখানে গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত চিত্রগুলি সংযুক্ত হয়েছে। সিন্ধু সভ্যতায় শিবের উৎস সন্ধানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সিলগুলির চিত্র ও ক্ষেত্রসমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত চিত্রগুলি এই অংশের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গবেষণাকর্মের শেষে রয়েছে গ্রন্থপঞ্জি। প্রাগার্য যুগ থেকে শুরু করে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত ভারতীয় ঐতিহ্য ও সাহিত্যে ক্রমান্বয়ে শিবের বিবর্তনকে অনুসন্ধান করাই এই গবেষণার উদ্দেশ্য।Item Jibananander Upanyas O ManosamikshanbadMandal, Sandip Kumarজীবনানন্দ দাশ বাংলা সাহিত্যে কবি হিসাবে পরিচিত হলেও কথা সাহিত্যে তাঁর আত্মপ্রকাশ প্রশংসার দাবি রাখে। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত জীবনানন্দ দাশ বিদেশি সাহিত্য ও সাহিত্যতত্ত্ব দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত ছিলেন, যা তাঁর লেখাতে প্রকাশ পেয়েছিল। তাঁর উপন্যাসগুলি তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশের মুখ না দেখলেও পরবর্তী কালে সেই উপন্যাসগুলি পাঠক মহলে সমাদর লাভ করে। তাঁর উপন্যাসগুলি সময়ের দিক থেকে স্বতন্ত্র ছিল। কথনভঙ্গি, গদ্যশৈলী, পরিবেশনা--সব কিছুতেই উপন্যাসগুলির মধ্যে এক ভিন্ন রূপরীতি চোখে পড়ে। তার সঙ্গে পাশ্চাত্য তত্ত্বের সমারোহ তার উপন্যাসে চোখ এড়ায় না। এখানে আমাদের আলোচনার কেন্দ্রে মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড প্রদত্ত মনঃসমীক্ষণবাদ। সাহিত্য সমাজ ব্যতীত অসম্ভব, তাই সবার আগে সমাজের চোখ দিয়ে সাহিত্যকে বিচার করলে সেই সাহিত্যের এক ভিন্ন মাত্রা পাওয়া যায়। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে ‘জীবনানন্দ দাশ ও সমসাময়িক দেশ কাল সাহিত্য’ শীর্ষক প্রথম অধ্যায়ে কালের নিরিখে জীবনানন্দ দাশের উপন্যাস ও তাঁর সমকাল আলোচনা করা হয়েছে। অধ্যায়টি তিনটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত, ‘জীবনানন্দের আবির্ভাব কাল ও সমকালীন ঔপন্যাসিক’ শীর্ষক প্রথম পরিচ্ছেদে জীবনানন্দের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও তাঁর সমকালের শিল্পীদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ বর্ণিত। ‘সমকালীন ইতিহাসপ্রবাহ ও সাহিত্য’ পরিচ্ছেদটিতে সেই সময়ের ইতিহাস ও সাহিত্যের আলোচনা করা হয়েছে। ‘সমসাময়িকতার পটে জীবনানন্দের উপন্যাস’ পরিচ্ছেদটিতে জীবনানন্দের উপন্যাসে সমকালের অবস্থান বর্ণিত। দ্বিতীয় অধ্যায়ে পাশ্চাত্য তত্ত্ব হিসাবে মনঃসমীক্ষণবাদের উৎপত্তি ও তার বিস্তার আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টিকে বিস্তারিতভাবে জানার উদ্দেশ্যে অধ্যায়টি তিনটি পরিচ্ছেদে ভাগ করা হয়েছে। ‘মনঃসমীক্ষণবাদের উন্মেষ প্রহর প্রাচ্য-পাশ্চাত্য’ শীর্ষক প্রথম পরিচ্ছেদটি ফ্রয়েড পূর্ববর্তী সময়ে মনের বিশ্লেষণ যে রূপে এসেছে, তা বিস্তারিতভাবে আলোচিত। পরিচ্ছেদটি ‘প্রাচ্য পর্ব’ ও ‘পাশ্চাত্য পর্ব’ এই দুই ভাগে বিভক্ত। ‘মনঃসমীক্ষণবাদী তত্ত্ব ও আন্দোলন’ নামাঙ্কিত দ্বিতীয় পরিচ্ছেদটিতে ‘মনঃসমীক্ষণবাদ’ বিষয়টির বিশ্লেষণমূলক আলোচনা করা হয়েছে। ‘জীবনানন্দের সৃষ্টিকর্ম : ব্যক্তি ও মন’ শীর্ষক তৃতীয় পরিচ্ছেদটিতে জীবনানন্দ নিজে এই তত্ত্ব দ্বারা কতটা প্রভাবিত ছিলেন, তা আলোচিত। জীবনানন্দ দাশের পূর্বে বাংলা উপন্যাসে মনঃসমীক্ষণবাদী কোনো লক্ষণ দেখা গেছে কিনা সে বিষয়ে জানতে ‘জীবনানন্দ পূর্ববর্তী ঔপন্যাসিক ও জীবনানন্দ’ নামাঙ্কিত তৃতীয় অধ্যায়টির অবতারণা। বাংলা কথাসাহিত্য নির্মাণের পূর্বে যেহেতু পাশ্চাত্য কথাসাহিত্যের আগমন তাই এই অধ্যায়ের প্রথম পরিচ্ছেদে ফ্রয়েড পূর্ববর্তী সময়ে ‘মন’ সাহিত্যে কী রূপে এসেছে তা ‘পাশ্চাত্য সাহিত্য : প্রাক্ ফ্রয়েডীয় মনস্তত্ত্ব’ শীর্ষক প্রথম পরিচ্ছেদে বর্ণিত। ‘বাংলা উপন্যাসের আদিপর্ব : মনোবৃত্তির অগোচরে’ নামক দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বাংলা উপন্যাসের আদি সময় আলোচিত, তবে তার পরবর্তী অংশ ‘বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়’ নামাঙ্কিত তৃতীয় পরিচ্ছেদটি জীবনানন্দের পূর্ববর্তী ঔপন্যাসিকদের উপন্যাসে থাকা মনঃসমীক্ষণের অঙ্কুরের নির্দেশ দেয়। ‘জীবনানন্দের উপন্যাস ও মনঃসমীক্ষণবাদ’ শীর্ষক চতুর্থ অধ্যায়টি এই গবেষণাপত্রের প্রধান অধ্যায়। ফ্রয়েড প্রদত্ত তত্ত্বানুসারে অধ্যায়টি তিনভাগে বিভক্ত, ‘নরনারীর সম্পর্কের জটিল এষণা : লিবিডো, বিকৃতকাম ও লিঙ্গগত ভাবনা এবং জীবনানন্দের উপন্যাস’ শীর্ষক প্রথম পরিচ্ছেদটি এই তিনটি অংশে বিভক্ত। জীবনানন্দের উপন্যাসের চরিত্র সহযোগে বিষয়গুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পরবর্তী ‘স্বপ্ন : অবদমন ও অবদমিত ইচ্ছা চরিতার্থতার নিষিদ্ধ দুনিয়া এবং জীবনানন্দের উপন্যাস’ শীর্ষক দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ও ‘আগ্রাসীপ্রিয়তা বনাম আগ্রাসীবিমুখতা : সৃষ্টি ও ধ্বংসের উপাখ্যান এবং জীবনানন্দের উপন্যাস’ শীর্ষক তৃতীয় পরিচ্ছেদটিতে একইভাবে জীবনানন্দের উপন্যাসের চরিত্রগুলি সহযোগে ফ্রয়েড প্রদত্ত ভাবনাগুলির পদচালনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আমরা জানি জীবনানন্দ দাশ তাঁর উপন্যাসগুলি ১৯৩১ (‘পূর্ণিমা’) থেকে ১৯৪৮ (‘বাসমতীর উপাখ্যান’) সালের মধ্যে রচনা করলেও উপন্যাসগুলি প্রকাশ পায় অনেক পরে। কিন্তু সেই সময় ব্যবধানে মনঃসমীক্ষণবাদ তত্ত্বটি তো তত্ত্ববিশ্বে স্থির থাকেনি, বরং আরো বিবর্ধিত হয়েছে, ফ্রয়েড পরবর্তী সময়ে নব্য মনঃসমীক্ষণবাদীরা এসেছেন আরো নতুন নতুন ভাবনার সম্ভার নিয়ে। তাঁদের ভাবনা আরো বহুমুখী ও ভিন্ন ভিন্ন। তাই জীবনানন্দ পরবর্তী ঔপন্যাসিকদের উপন্যাস নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তত্ত্বের ক্ষেত্রে বিস্তর ফারাকের দেখা যাবার কারণে জীবনানন্দের উপন্যাসের রচনাকাল ধরে জীবনানন্দ পরবর্তী ঔপন্যাসিক হিসেবে সমরেশ বসু, বিমল কর ও দিব্যেন্দু পালিতকে গ্রহণ করা হয়েছে, এ কথা স্পষ্ট যে তাঁরা জীবনানন্দের উপন্যাস পড়েননি, কারণ তা তখনো প্রকাশের মুখ দেখেনি, কিন্তু ফ্রয়েডের প্রভাব তাঁদের লেখায় দেখা যায়, তাই ফ্রয়েড প্রদত্ত তত্ত্ব ভাবনার কথা মাথায় রেখে ‘জীবনানন্দোত্তর বাংলা উপন্যাসে মনঃসমীক্ষণবাদ ও জীবনানন্দ’ শীর্ষক পঞ্চম অধ্যায়ে তাঁদের উপন্যাসে মনঃসমীক্ষণবাদের প্রভাব আলোচিত। জীবনানন্দের উপন্যাসের চরিত্রগুলি সহযোগে একপ্রকার তুল্যমূল্য আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনার শেষে ষষ্ঠ অধ্যায়ের নাম ‘উপসংহার’, এখানে গবেষণা কর্মের সামগ্রিক মূল্যায়ন আলোচিত। একদম শেষে আছে ‘গ্রন্থপঞ্জি’। এই গবেষণায় জীবনানন্দ দাশের উপন্যাসগুলিকে নতুন দৃষ্টিতে পাঠ করেছি, মূলত বিশ্লেষণ-পদ্ধতিটি এখানে প্রকৃত মাধ্যম।Item ‘Bangla Chhotogalpe Udbastu Samasya: Rup O Rupantar (1947- 2000)Biswas, Uttamkumarবাাংলা ছ াটগল্পে ‘উদ্বাস্তু’ সমসযার কথা বলল্পে ছগল্পলই ‘উদ্বাস্তু’ বলল্পে আমরা ঠিক কাল্পের বুঠি এঠবষল্প়ে একঠট পঠরচ্ছন্ন আল্পলাচনা করা জরুঠর হল্প়ে ওল্পি। একজন মানুষ ছে অঠনচ্ছার পল্পরও োর ছচনা-পঠরঠচে ঘরবাঠ়ি, োর সাল্পথ সম্পৃক্ত হল্প়ে োও়ো পঠরল্পবশ ছ ল্প়ি অনযত্র বা অনযল্পেল্পশ রাষ্ট্রী়ে ঠনরাপত্তার কারল্পে বা ঠনল্পজল্পক বাাঁচাল্পে ুল্পট ো়ে, ছসই মানুষ বা মানুষল্পেরই আমরা উদ্বাস্তু বল্পল থাঠক। ছসাজা কথা়ে অঠনচ্ছার পল্পরও ঘর া়িা মানুষই হল্প়ে ওল্পি ঠবপেযস্ত উদ্বাস্তু। আজল্পকর ঠেল্পন ঠসঠর়োন বা ছরাঠহঙ্গাল্পের সমসযা োরই নামান্তর। এসবই ঘল্পট চল্পলল্প উপেুক্ত ঠনরাপত্তাহীনোর খাঠেল্পর। উদ্বাস্তু মানুল্পষর ুল্পট ছব়িাল্পনার পালা আজও ছশষ হ়েঠন, বরাং ছবল্প়িই চল্পলল্প । এই বাস্তুহারা মানুষই আমার গল্পবষোর মূল আল্পলাচয ঠবষ়ে, োল্পের জীবল্পনর করুে রূপান্তরই আমার গল্পবষোর মূল চাঠবকাঠি। আমার এই গল্পবষো কমযঠটল্পক পঠরষ্কার কল্পর ফুঠটল্প়ে েুলল্পে আঠম একঠট প্রস্তাবনা, ’ঠট অধ্যা়ে এবাং ছশল্পষ উপসাংহার বযবহার। প্রথম অধ্যা়ে, ‘ছ ৌল্পগাঠলক পঠরমণ্ডল ও উদ্বাস্তু সমসযা’ নামক অধ্যাল্প়ে আঠম আন্তজযাঠেক ছ ৌল্পগাঠলক পঠরমণ্ডল্পল এই উদ্বাস্তু মানুল্পষর সমসযার একঠট রূপল্পরখা অঙ্কন করার ছচষ্টা কল্পরঠ । ঠদ্বেী়ে অধ্যা়ে, ‘সামাঠজক-অথযননঠেক-রাজননঠেক ছপ্রক্ষাপট ও উদ্বাস্তু সমসযা’- অধ্যা়েঠটল্পে আঠম ঠনবযাঠচে ঠক ু গে ঠনল্প়ে উদ্বাস্তু মানুল্পষর এই নানাঠবধ্ সাংকট ফুঠটল্প়ে ছোলার ছচষ্টা কল্পরঠ । েৃেী়ে অধ্যা়ে, ‘সাাংস্কৃঠেক- াষাগে পঠরবেযন: উদ্বাস্তুর আত্মসাংকট ও বাাংলা ছ াটগে’ নামক অধ্যাল্প়ে মূলে ছেঠখল্প়েঠ সাংস্কৃঠে এবাং াষা পঠরবেযল্পনর ফল্পল উদ্বাস্তু মানুষ ঠক াল্পব চরম সাংকল্পটর মুল্পখামুঠখ হল্প়েল্প । চেুথযঅধ্যা়ে, ‘উদ্বাস্তু জীবল্পনর গল্পে বাঙাঠলর রূপ ও রূপান্তর’- অধ্যা়েঠটল্পে ঠনবযাঠচে ঠক ুগে অবলম্বল্পন উদ্বাস্তু মানুল্পষর জীবল্পনর রূপান্তঠরে নানাঠবধ্ সমসযার কথা আল্পলাচনা কল্পরঠ । পঞ্চম অধ্যা়ে, ‘উদ্বাস্তু সমসযার রূপ ও রূপান্তর: বাাংলা ছ াটগে ও অনযানয সাঠহেয প্রকরে’-এ মূলে আঠম সাঠহল্পেযর অনযানয প্রকরে ঠবল্পশষ কল্পর উপনযাস, নাটক ও কঠবো়ে উদ্বাস্তু মানুল্পষর ঠচত্র েুল্পল ধ্ল্পরঠ । ষষ্ঠ অধ্যা়ে, ‘উদ্বাস্তু জীবল্পনর গে: প্রাল্পেঠশক ও আন্তজযাঠেক পঠরমণ্ডল’- অধ্যাল্প়ে উদ্বাস্তু সমসযার ঠচত্র শুধ্ুমাত্র পঠিমবল্পঙ্গর মল্পধ্যই সীমাবদ্ধ রাঠখঠন বরাং উদ্বাস্তু সমসযার রূপ ও রূপান্তল্পরর ছপ্রক্ষাপট বাাংলাল্পেশ ও পাঠকস্তাল্পনর ঠক ু ছ াটগল্পের মধ্য ঠেল্প়েও আল্পলাচনা করার ছচষ্টা কল্পরঠ । এরই পাশাপাঠশ প্রাল্পেঠশক স্তল্পরর ঠক ু গল্পের আল্পলাচনাও এখাল্পন স্থান ছপল্প়েল্প । ছেশ াগ মাল্পন ছে শুধ্ুকাাঁটাোল্পরর ছব়িা ন়ে, এটা অঠধ্কাাংশ বাঙাঠলর বেযমান সমল্প়ে মল্পন রাখা উঠচে। কাাঁটার োগ মানুল্পষর মনল্পন, ঠচন্তল্পন, জীবনোত্রা়ে রল্প়ে ছগল্প । োই আজও ঘঠট-বাঙাল্পলর দ্বন্দ্ব, ইস্টল্পবঙ্গল-ল্পমাহনবাগাল্পনর ছখলাল্পক ছকন্দ্র কল্পর ছনাাংরা েরজার ঠচত্র উল্পি আল্পস। এই কাাঁটা এপার বাাংলা-ওপার বাাংলার মানুল্পষর মল্পধ্য এখনও বেযমান। োই ছেশ াগ মাল্পন শুধ্ু োঙ্গা ন়ে, ঘর হারাল্পনা ন়ে, ঠ ন্নমূল হও়ো ন়ে, োল্পে ঠমল্পশ আল্প এক ঠবরাট সামাঠজক-সাাংস্কৃঠেক ছ ালবেল্পলর ঠচত্র। মানবজাঠের ইঠেহাল্পস এই ঘটনা সঠেযই ‘ইঠেহাস’...ঠকন্তু ছচেনা়ে উদ্বাস্তুর অপরা়েে বা উদ্বাস্তুর আত্মসাংকট আজও ছশষ হ়েঠন। সমাল্পজর কাল্পলকঠট আনকনশাসল্পনল্পস এর পল্পরও এই ছচেনা থাকল্পব— বল্প়ে োল্পব এক সাংগ্রাল্পমর, বঞ্চনার, ঘুল্পর োাঁ়িাল্পনার ঠস্থঠেস্থাপক স্মৃঠে হল্প়ে।Item Sisirkumar Daser Moulik Bangla Sahitye Pratifalita Darshan O MananAhamed, Mostakশিশিরকুমার দাশের সর্বভারতীয় মান্যতা বৈদগ্ধ্যপূর্ণ পাণ্ডিত্যের কারণে হলেও সৃজনশীল সাহিত্যেও তিনি সমান পারদর্শী। বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যার অলিন্দে তিনি স্বচ্ছন্দ পদচারণা করেননি। তাঁর হাত ধরে বাংলা সাহিত্যে সংযোজিত হয়েছে বহু অতুলনীয় সম্পদ। তা সত্ত্বেও তাঁর সৃজনশীল সাহিত্যগুলি আজও অনালোচিত, অচর্চিত। এমন একজন প্রতিভাবান মানুষের সমগ্র সৃষ্টি বিস্মৃতির অন্তরালে থেকে যাওয়া তাঁর ওপর যেমন অবিচার, পাশাপাশি অবিচার বাংলা সাহিত্যের প্রতি। তাই বিস্মৃতির অন্তরালে থাকা শিশিরকুমার দাশকে নতুন করে আবিষ্কার ও সাহিত্য সমাজের কাছে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে তাঁর বৈচিত্র্যপূর্ণ সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের কাছে এই হাঁটুমুড়ে বসা। গবেষণা-সন্দর্ভটি ভূমিকা ও উপসংহার ব্যতিরেকে পাঁচটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত। এছাড়া রয়েছে তিনটি পরিশিষ্ট অংশ। প্রথম অধ্যায়-এর শিরোনাম ‘শিশিরকুমার দাশের কবিতা: দর্শনগত প্রজ্ঞার প্রকাশ’। চারটি কাব্যগ্রন্থ ও বিভিন্ন অগ্রন্থিত কবিতায় সময়ের সঙ্গে পর্যায়ক্রমিকভাবে কবির কাব্যদর্শনের বিস্তর বাঁকবদল ঘটেছে। ফলে বদলে গেছে কবিতার ভাব, ভাষা ও নিহিত আত্মদর্শন। এই অধ্যায়ে তাঁর কবিতার এই বাঁকবদলের চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়-এর বিষয় ‘শিশিরকুমার দাশের নাটক: চেতনা ও প্রজ্ঞার দার্শনিক উদ্ভাসন’। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর নাট্যসাহিত্য। এই অধ্যায়ে মোট বিয়াল্লিশটি মৌলিক বাংলা নাটকের সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ করে নাটকগুলিতে শিশিরকুমার দাশের যে দর্শনের প্রকাশ ঘটেছে তা তুলে আনা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়-এর আলোচনা এগিয়েছে শিশিরকুমার দাশের তেরোটি বাংলা প্রবন্ধগ্রন্থ ও প্রায় শতাধিক অগ্রন্থিত প্রবন্ধগুলিকে কেন্দ্র করে। শিরোনাম ‘শিশিরকুমার দাশের প্রবন্ধ: বোধিচর্চার বহুমাত্রা’। চতুর্থ অধ্যায়-এর কেন্দ্রবিন্দু ‘শিশিরকুমার দাশের কথাসাহিত্য ও অন্যান্য আখ্যানধর্মী রচনা: সময়, সমাজ ও দর্শন’। এই অধ্যায়ে তাঁর দু-টি উপন্যাস, আটচল্লিশটি ছোটোগল্প, একটি আখ্যানগ্রন্থ, মুক্ত গদ্য ও ছদ্মনামে রচিত কিছু ব্যঙ্গাত্মক রচনা ঘিরে তাঁর সমাজ বিষয়ক ভাবনার সন্ধান করা হয়েছে। পঞ্চম অধ্যায়-এর ভাবনা বিস্তারলাভ করেছে শিশু-কিশোরকেন্দ্রিক ছড়া, উপন্যাস, নাটক ইত্যাদি সাহিত্যগুলিকে কেন্দ্র করে। শিরোনাম ‘শিশিরকুমার দাশের শিশু-কিশোর সাহিত্য: শিশু-কিশোর মনের বিচিত্র অবলোকন’। শিশিরকুমার দাশের সৃষ্টির সার্বিক মূল্যায়নের লক্ষ্যে পরিশিষ্ট ১ ‘শিশিরকুমার দাশের অনুবাদ: সীমা ও সম্ভাবনা (নির্বাচিত গ্রন্থ অবলম্বনে)’ অংশে তাঁর অনুবাদ গ্রন্থগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পরিশিষ্ট ২ অংশের ভাবনা— যৌথভাবে রচিত ‘শাশ্বত মৌচাক: রবীন্দ্রনাথ ও স্পেন’ এবং ‘বিতর্কিত অতিথি: রবীন্দ্রনাথ ও চীন’ গ্রন্থ দুটি। শিরোনাম ‘শিশিরকুমার দাশের ভাবনায় রবীন্দ্রনাথ: বিশ্বের দরবারে অভ্যর্থনা ও প্রত্যাখ্যান’। পরিশিষ্ট ৩ অংশে আছে শিশিরকুমার দাশের একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনপঞ্জি। এই পরিসরের শিরোনাম ‘শিশিরকুমার দাশের জীবন: কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্য’।Item Bangla Natoke Rajnoitik Patabhumi Bish Shataker Sater DashakBiswas, Uttam kumarবিশ শতকের সাতের দশক রাজনৈতিক দিক থেকে নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই দশকে দেখা গেছে প্রতিহিংসার রাজনীতি, একাধিক গণ-আন্দোলন, সামাজিক জীবনে বিপর্যয়, ক্ষমতা দখলের উন্মত্ত লড়াই, সমাজতন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা, কমিউনিস্ট পার্টিগুলির মধ্যে পারস্পরিক মতবিরোধ ইত্যাদি। এককথায় রাজনৈতিক দিক থেকে যতরকম জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে তা এই দশকে প্রকট হয়ে ওঠে। কেবল রাজনৈতিক জটিলতা ও প্রতিহিংসার মধ্যেই এই দশক শেষ হয়নি, সেইসঙ্গে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য মানুষকে সংগ্রাম করতেও দেখা গেছে। তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির বিরুদ্ধে। সেরকমই প্রতিরোধের একটি ধারা নাটকের মধ্যেও প্রবাহিত হয়েছে। সময়ের এই জটিল রাজনীতির মধ্যে দাঁড়িয়ে নাটককাররা নিজেদের দায়িত্ব ভুলে যাননি। যেখানে ও যখনই কোনো নিষ্পেষণ হতে দেখা গেছে তখনই তারা নিজেদের সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে তার প্রতিবাদ করেছেন। ফলে গোটা দশক জুড়ে বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে একাধিক রাজনীতি সম্বলিত নাটক রচনা ও পরিচালনা করে মানুষকে রাজনীতি সচেতন করেছেন, প্রতিবাদমুখর করেছেন, শাসকের স্বৈরাচারিতা ও খামখেয়ালিপনার প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছেন। আমাদের সম্পূর্ণ গবেষণা অভিসন্দর্ভটি প্রস্তাবনা ও উপসংহার বাদে মোট ছয়টি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রস্তাবনা অংশে পূর্ববর্তী গবেষণার পর্যালোচনা করে আমাদের গবেষণার অভিমুখ ব্যক্ত হয়েছে। আমাদের গবেষণার প্রথম অধ্যায় ‘বাংলা রাজনৈতিক নাটকের ইতিহাস : উদ্ভব থেকে বিশ শতকের ছয়ের দশক’—ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারের প্রশ্নে নির্মিত। এখানে রাজনৈতিক নাটকের স্বরূপ বিশ্লেষণ করে সাতের দশকের পূর্বে রচিত বাংলা রাজনৈতিক নাটকের ইতিহাস আলোচিত হয়েছে। যে আলোচনা রাজনৈতিক পটভূমির বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণতা পেয়েছে। ‘সাতের দশকের রাজনৈতিক পটভূমি’ শিরোনামের দ্বিতীয় অধ্যায়টি দুটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। প্রথম পরিচ্ছেদ ‘কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রেক্ষিত’-এ সাতের দশকের ভারতবর্ষের রাজনৈতিক অভিঘাতগুলি আলোচিত এবং দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ‘রাজ্যের (পশ্চিমবঙ্গ) রাজনৈতিক প্রেক্ষিত’-এ পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক জটিলতা তুলে ধরা হয়েছে। গবেষণার তৃতীয় অধ্যায় ‘পশ্চিমবঙ্গের নাটকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন’। ১৯৭১-এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অভিঘাত পশ্চিমবঙ্গের নাটককারদের উপর কীভাবে পড়েছিল তা আলোচিত হয়েছে এই অধ্যায়টিতে। নকশাল আন্দোলন ছিল সাতের দশকের পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের রাজনীতিতে সব থেকে বড় আলোড়ন। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বহু নাটক রচিত ও পরিচালিত হয়েছে। সেইসব নাটকগুলি থেকে কিছু নাটক নির্বাচিত করে তৎকালীন নাটককারদের কাছে নকশাল আন্দোলনের স্বরূপটি কেমন ছিল তার পরিচয় চতুর্থ অধ্যায় ‘নকশাল আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত বাংলা নাটক’-এ লিপিবদ্ধ। আমাদের গবেষণার পঞ্চম অধ্যায় ‘সাতের দশকের রাজনৈতিক সন্ত্রাসের চিত্র বাংলা নাটকে’। বহুমুখী রাজনৈতিক লাইনকে কেন্দ্র করে এই দশকে যে সন্ত্রাসের বাতাবরণ সামাজিক জীবনে তৈরি হয়েছিল তার বিভিন্ন দিক যেসব নাটকে চিত্রিত হয়েছে, সেইসব নাটকের রাজনৈতিক অবস্থানই বা কী—সেই বিষয় এখানে আলোচিত। সাতের দশকের রাজনৈতিক পটভূমিতে সর্বোচ্চ শিখর ছিল জরুরি অবস্থা। গণতন্ত্রের অপলাপ, স্বেচ্ছাচারিতার নগ্নরূপ সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়। তারপরেও সেসময়ের কিছু নাটককার এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের সেই রাজনৈতিক ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে ষষ্ঠ অধ্যায় ‘বাংলা নাটকে জাতীয় জরুরি অবস্থার পটভূমি’-তে। ‘উপসংহার’-এ সমগ্র গবেষণার সামগ্রিক মূল্যায়ন উঠে এসেছে। গবেষণার শেষে দেওয়া হয়েছে গ্রন্থপঞ্জি—এখানে আমাদের গবেষণায় ব্যবহৃত যাবতীয় গ্রন্থ, পত্রপত্রিকা, আন্তর্জালিক মাধ্যমের একটি তালিকা যুক্ত হয়েছে।Item Saptahik Bangla Sahitya Patrika Amrita Pratyasha O Praptir RuparekhaBandyopadhyay, Swarupaবিলুপ্ত সাহিত্য পত্রিকা ‘অমৃত’-র নাম এখন সেইভাবে কোথাও আলোচিত হয় না। অথচ ‘প্রবাসী’, ‘ভারতবর্ষ’, ‘সবুজপত্র’, ‘বিচিত্রা’, ‘পরিচয়’, ‘কবিতা’, ‘পূর্বাশা’, ‘শনিবারের চিঠি’ ছাড়াও একেবারে হাল আমলের ‘কলকাতা’, ‘অন্বিষ্ট’, ‘এক্ষণ’ ইত্যাদি সাময়িকপত্র নিয়ে নানা আলোচনা প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ‘কোরক’ সাহিত্য পত্রিকার ২০০৬ সালের প্রাক-শারদ সংখ্যাটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। এই বিশেষ সংখ্যাটির বিষয় ছিল ‘বিলুপ্ত সাহিত্য পত্র’। অপার বিস্ময়ে লক্ষ করা যায়, সেখানেও নানা বিলুপ্ত সাহিত্য সাময়িকপত্রের সঙ্গে উপরিউক্ত সবকটি পত্রিকা আলোচিত হলেও, কোথাও ‘অমৃত’-র উল্লেখ নেই। প্রশ্ন আসতেই পারে ‘অমৃত’ সাহিত্য পত্রিকা নিয়ে গবেষণা কেন করেছি। ঘটনাটি এইরকম— বাড়িতে খুঁজে পাওয়া এই পত্রিকার নিউজ প্রিন্টে ছাপা কয়েকটি একেবারে জীর্ণ হয়ে যাওয়া সংখ্যা পড়তে পড়তে মনে হয়েছিল, বিখ্যাত সাহিত্যপত্র ‘দেশ’-এর মতই বা প্রায় সমমানের ঋদ্ধ একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিল ‘অমৃত’। এরপরেই আমার শিক্ষকপ্রতিম পিতার কাছ থেকে, যিনি ‘অমৃত’-র আবির্ভাব থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত প্রায় সবকটি সংখ্যা পড়েছেন, ‘অমৃত’-র নানা কথা তাঁর কাছ থেকে শুনতে লাগলাম। শুনলাম কীর্তিহাটের কড়চা, কবি রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ ও ক্রিস্টিন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ইতিহাস-এর কথা। সেই থেকেই এই বিলুপ্ত সাহিত্যপত্রটি নিয়ে গবেষণার একটি চিন্তা আমার মধ্যে আসে। একইসঙ্গে ছিল সচেতন সাহিত্য-পাঠকের দায়বদ্ধতার ব্যাপারটিও। ‘অমৃত’ নিয়ে গবেষণাপত্রটি আমি প্রস্তাবনাসহ আটটি অধ্যায় এবং উপসংহারের মাধ্যমে বিন্যস্ত করেছি। প্রথম অধ্যায়টি হল ‘অমৃত’ পত্রিকার সম্পাদকীয়: দেশ ও কালের প্রতিফলন। এখানে পত্রিকার নির্বাচিত সম্পাদকীয় কলমগুলি আলোচনা করা হয়েছে, যেখানে মূলত সমকালের কথা প্রতিফলিত হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায় সাপ্তাহিক ‘অমৃত’ পত্রিকার সূচি-সংকলন-এ সাময়িকপত্রটির প্রায় সামগ্রিক সূচি নানা আঙ্গিকে সজ্জিত করা হয়েছে ভবিষ্যৎ পাঠক ও গবেষকগণের সুবিধার্থে। তৃতীয় অধ্যায়ে রয়েছে ‘অমৃত’ সাহিত্য পত্রিকায় রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ‘অমৃত’-পত্রিকায় যত রচনা প্রকাশিত হয়েছে, তারই একটি সামগ্রিক আলোচনা এটিতে করা হল। চতুর্থ অধ্যায়টি নিদিষ্ট করা হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দ ও সাপ্তাহিক ‘অমৃত’ শিরোনামে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বিবেকানন্দ-র প্রাসঙ্গিকতা যে অনস্বীকার্য, তা ‘অমৃত’-এ প্রকাশিত বিবেকানন্দ সম্পর্কীয় রচনাগুলির মধ্যেই নিহিত রয়েছে। পত্রিকার সমগ্র আয়ুষ্কালটি ধরে যে বিপুল প্রবন্ধসম্ভার প্রকাশ পেয়েছে, তারই নির্বাচিত রচনাগুলি নিয়ে আলোচনা ও সবকটির উল্লেখ ‘অমৃত’-এ প্রকাশিত প্রবন্ধ ও বিশেষ নিবন্ধ শীর্ষক পাঁচ নম্বর অধ্যায়ে আছে। ষষ্ঠ অধ্যায়টি সাপ্তাহিক ‘অমৃত’-এর কথাসাহিত্য নিয়ে। ‘অমৃত’-এ প্রকাশিত অসংখ্য ছোটোগল্প, ধারাবাহিক উপন্যাস এবং পূর্ণাঙ্গ উপন্যাসগুলির বিস্তৃত আলোচনা এখানে করা হয়েছে। সপ্তম অধ্যায়টিতে আলোচিত হয়েছে ‘অমৃত’-য় প্রকাশিত কবিতা সম্ভার। নির্বাচিত কবিতার পর্যালোচনার সঙ্গে সঙ্গে এখানে প্রতিটি কবিতার প্রথম পংক্তিসহ একটি তালিকা নির্মিত হয়েছে। শেষ অষ্টম অধ্যায়টি হল নাটক প্রকাশনা এবং নাট্য-আলোচনায় ‘অমৃত’ পত্রিকা। প্রকাশিত নাটকগুলি এবং নাট্য-সম্পর্কীয় রচনাগুলি এখানে আলোচিত। বিভাজিত অধ্যায় সমূহে এবং উপসংহারে এই বিশাল গবেষণাকর্মের প্রাসঙ্গিকতা, বৈচিত্র্য ও দায়বদ্ধতা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিলুপ্ত সাহিত্যপত্র ‘অমৃত’-র সামগ্রিক ও হারিয়ে যাওয়া অমূল্য ও সমৃদ্ধ রচনাগুলির একটি সামগ্রিক এবং পূর্ণাঙ্গ রূপও বিবৃত হয়েছে। গবেষণার পরিশিষ্ট অংশেও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন করা হয়েছে।Item Bangla Geetikar Adhunik Rupantar Natak O yatrar seemayMukherjee, Ritam‘কোথায় পাব কলসী কইন্যা কোথায় পাব দড়ি। তুমি হও গহীন গাঙ আমি ডুইব্যা মরি।।’ নয়ে নাটুয়া’র ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র প্রযোজনায় এই গান শেষ করে মাইক্রফোন নামানোর আগেই প্রেক্ষাগৃহ করতালিতে ফেটে পড়ল। আজ অবধি বাংলা জনপ্রিয়তম (অধিকাংশ জনের মতে) যাত্রাপালার নাম ‘সোনাই দীঘি’। ‘মাধব মালঞ্চী কইন্যা’ বাংলা থিয়েটারে এক মাইলস্টোন! ‘সোনাই মাধব’-এর অভিনয় করে বাংলাদেশের ‘লোক নাট্যদল’ ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। শ্রীকুমার ভট্টাচার্য ‘কাজলরেখা’ নাটকে সূঁচরাজার সুস্থ হয়ে ওঠাকে আধুনিক আকুপাংচার চিকিৎসার সুফল হিসেবে দেখান। হিন্দু-মুসলিমের বিভেদ দেখিয়ে সানি চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহুয়া সুন্দরী’ মহুয়া গীতিকার নতুন পাঠ নির্মাণ করেন। কেন বাংলা নাটক, যাত্রা, থিয়েটার নিজের উপাদানের জন্য বারবার বাংলা গীতিকার কাছে যায়? কোন্ সময় থেকে তা শুরু হলো? আজ পর্যন্ত কতগুলি মাধ্যমে বাংলা গীতিকার রূপান্তর হয়েছে? গীতিকার কাহিনির যে আধুনিক রূপান্তর হয়েছে তার চরিত্র, বৈশিষ্ট্য কী?- ইত্যাদি নানান দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে ‘বাংলা গীতিকার আধুনিক রূপান্তর : নাটক ও যাত্রায় সীমায়’ শিরোনামের গবেষণায়। বাংলার তিন ধরনের গীতিকা- ‘নাথ গীতিকা’, ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ ও ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’র কাহিনি বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে কীভাবে নাটক ও যাত্রায় আধুনিক রূপান্তর লাভ করেছে সে বিষয়ে বিস্তৃত আলোকপাত করা হয়েছে বর্তমান গবেষণায়। প্রথম অধ্যায়ে গীতিকার জন্ম ইতিহাস, বৈশিষ্ট্য ও বাংলা গীতিকার আবিষ্কার ও প্রকাশ ইতিহাস বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে পশ্চিমবঙ্গে নাটক ও নাট্যের মাধ্যমে গীতিকার রূপান্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে পশ্চিমবঙ্গে যাত্রায় গীতিকার রূপান্তর বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ে পশ্চিমবঙ্গে অন্যান্য শিল্প মাধ্যমে (যেমন কবিতা, উপন্যাস, ছোটোগল্প, চলচ্চিত্র, নৃত্য, সংগীত ইত্যাদি) গীতিকার আধুনিক রূপান্তরের বিষয়ে অতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে (যেমন- নাটক, যাত্রা, কিস্সা পালা, কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, চলচ্চিত্র, নৃত্য, সংগীত ইত্যাদি) গীতিকার কাহিনির যে আধুনিক রূপান্তর ঘটেছে সে বিষয়ে পঞ্চম অধ্যায়ে সংক্ষিপ্ত তথ্যমূলক আলোচনা রয়েছে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে গীতিকার রূপান্তরের কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চলেছে। সপ্তম অধ্যায়ে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যম কীভাবে নিজস্ব শর্তে গীতিকা গ্রহণ করছেন এবং নিজেকে সমৃদ্ধ করছে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অষ্টম অধ্যায়ে সমাজ, সংস্কৃতিতে রূপান্তরের প্রভাবের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। উপসংহার অংশে বাংলা সাহিত্যের আদি যুগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলার নিজস্ব অভিনয় পদ্ধতির বিবর্তনের সূত্র ধরে ঐতিহ্যের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা, বর্তমানে পুনরায় গীতিকার আখ্যান নির্ভর কাহিনির মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে লগ্নতা- এইসকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গবেষণা কর্মের শেষে রয়েছে গ্রন্থপঞ্জি। প্রতিটি অধ্যায়ের আলোচনার শেষে অধ্যায়ের আলোচনার সঙ্গে সংগতি রেখে ছবি সংযুক্ত হয়েছে। সমকালীন সমাজ, শিল্প, রাজনীতি এমনকি শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবন কতখানি ভূমিকা পালন করছে গীতিকার আধুনিক রূপান্তরে- ইত্যাদি বিষয় পাঠ আধেয় ও আন্তর্বিদ্যামূলক গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, ঐতিহাসিক পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকারও গ্রহণ করা হয়েছে। এই গবেষণা বর্তমান গবেষকের জানার সীমার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে গীতিকার আধুনিক রূপান্তর নিয়ে প্রথম কাজ (সম্ভবত বাংলাদেশেও)। পশ্চিমবঙ্গের নাটক ও যাত্রার গীতিকার রূপান্তরের পাঠভিত্তিক আলোচনা এই গবেষণায় অনেকখানি হয়ত করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এদেশে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে গীতিকার যে রূপান্তর হয়েছে কিংবা বাংলাদেশে বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে গীতিকার রূপান্তরের যে বিস্তৃত ক্ষেত্র তা নিয়ে নানা ধরনের গবেষণার পথপ্রদর্শক হতে পারে এই গবেষণা। গীতিকার ভাষা এবং গীতিকার রূপান্তরিত শিল্পের ভাষা বদল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বদলের সঙ্গে মানুষের চাহিদার বদল, শিল্প রাজনীতি, লোকসংস্কৃতি ও নাগরিক সংস্কৃতির পারস্পরিক আদানপ্রদান- ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সক্ষম এই গবেষণা।Item Satinath Bhadurir Upanyas : Kathantatwavittik BikshaMandal, Sandip KumarItem Jibanananda Daser Uponyas : Samay O ByaktimonNandi, ShaonItem Prachya O Paschatya Sahitya- Prekshite Samalochak RabindranathKumarbag, KhokanItem AFSAR AMEDER KATHASAHITYA : SAMAY O SAMAJER ABHIGHAT (NIRBACHITA UPANYAS O CHHOTOGALPA ABALAMBANE)Ahamed, Mostakশৈশবেই সাহিত্যচর্চাকে বাহন করে জীবনে পথচলার হাতিয়ার করেন যে সকল কথাশিল্পী তাঁদের মধ্যে আফসার আমেদ অগ্রগণ্য। পল্লিপ্রকৃতির স্নেহস্পর্শধন্য হাওড়া জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম কড়িয়াতে জন্মগ্রহণ করা এই স্রষ্টা সারাজীবন সমাজের বঞ্চিত, অবহেলিত, নির্যাতিত মানুষের সমবেদনায় সমব্যথী থেকেছেন। বাঙালি আত্মপরিচয়ে আত্মশ্লাঘা অনুভব করা ও সাধারণ মানুষের মনোবিশ্লেষণধর্মী গবেষণায় কৃতিত্বের সঙ্গে সাফল্যলাভ আফসার আমেদকে বাংলা কথাসাহিত্যের গিরি শিখরে উপনীত করে। আফসার আমেদের কথাসাহিত্য নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে প্রথমেই যে বিষয়টি সামনে আসে তা হল, তাঁর সমাজের পিছিয়ে পড়া, শোষিত, অত্যাচারিত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর প্রবণতা— তাদের বাস্তব অবস্থান, মানসিকতাকে সাহিত্য প্রাঙ্গণে প্রতিস্থাপিত করার এক অনবদ্য প্রয়াস। সমাজের সেই নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষজনের চেতন-অবচেতন মনের আণুবীক্ষণিক বিশ্লেষণে তিনি সত্যিই প্রশংসনীয়। সময় ও সমাজের অভিঘাতে আফসার আমেদের কথাসাহিত্য নিয়ে সার্বিক আলোচনাকে একটি ভূমিকা, পাঁচটি অধ্যায় এবং শেষে উপসংহারের মাধ্যমে তুলে ধরতে চেয়েছি। প্রথম অধ্যায় ‘আফসার আমেদ : সংক্ষিপ্ত জীবন পরিচয়’-এ তাঁর শৈশব, কৈশোর, যৌবন তথা সারাজীবনের অম্লমধুর স্মৃতিআশ্রয়ী বিভিন্ন ঘটনা তথা লেখক হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা, অল্পবয়সেই লেখক হিসাবে স্বীকৃতিলাভ, দারিদ্র্যতাকে আজীবন পাথেয় করে চলার অপরিসীম সাহস, ধৈর্য, শিক্ষাজীবন, সাংসারিক পরিমণ্ডল, পুরস্কারপ্রাপ্তি ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায় ‘সমসময়ের বাংলা কথাসাহিত্য ও আফসার আমেদ’-এ লেখকের সমকাল তথা আশির দশকের বাংলা কথাসাহিত্যের ধারা এবং সেসময়ের বিশিষ্ট বাংলা কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে তিনি নিজেকে কতটা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন, সেকথাই আলোচিত হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায় ‘আফসার আমেদের উপন্যাসে সময় ও সমাজের অভিঘাত’-এ বাংলা সাহিত্যে ব্যতিক্রমী রচনা হিসাবে লেখকের কিস্সা-উপন্যাসগুলির উপর আলোকপাত করা হয়েছে। এছাড়া, সমাজের বৈচিত্র্যধর্মী বিষয়ের নিরিখে লেখকের অন্যান্য নির্বাচিত উপন্যাসগুলির রূপকল্প নির্মাণ ইত্যাদি বিষয় এ অধ্যায়ে স্পষ্ট করা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায় ‘আফসার আমেদের ছোটোগল্পে সময় ও সমাজের অভিঘাত’-এ লেখকের অসামান্য সব ছোটোগল্প স্থান পেয়েছে। আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিচিত্র চরিত্রদের সমাবেশে আফসারের ছোটোগল্পগুলি বড়ো চমৎকারভাবে অঙ্কিত হয়েছে। পঞ্চম অধ্যায় ‘আফসার আমেদের কথাসাহিত্যে স্বতন্ত্রতা’-এ কথাসাহিত্যিক আফসার আমেদের উপন্যাস ও ছোটোগল্পগুলির বিষয়-আঙ্গিকগত বিশ্লেষণের পুঙ্ক্ষানুপুঙ্ক্ষ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার নিরিখে তাঁর সৃষ্টিসম্ভারের স্বতন্ত্র দিকগুলি আলোচনা করা হয়েছে। ‘উপসংহার’-এ কথাকার আফসার আমেদের কথাসাহিত্যের সাফল্য-ব্যর্থতার তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তাঁর স্থান নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়েছে।Item উনিশ শতকের কলকাতায় শিষ্ট নাগরিক সাহিত্য ও অপর সাহিত্যের দ্বান্দ্বিকতাMandal, Sandip KumarItem Item বিনির্মানবাদের প্রেক্ষিতে মনসামঙ্গল কাব্যের রূপ ও রূপান্তরের অনুসন্ধানMandal, Sandip KimarAvailable in Attached file